Breaking

Wednesday, July 18, 2018

অরাজকতা দেখে বলেছিলাম কোটা থাকবে নাঃ আসলে কোন যুক্তি নেই

কোটা আন্দোলনের পেছনে কী যৌক্তিকতা থাকতে পারে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আমরা বুঝতে পারছি না কোটাপদ্ধতির বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক আন্দোলনের পেছনে কী যুক্তি কাজ করছে।’ তিনি বলেন, ‘আন্দোলনের অরাজক পরিস্থিতি দেখে আমি বলেছিলাম, ঠিক আছে কোটা থাকবে না।’

এখন থেকে অনেক মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের সম্মানী ভাতা পাবেন ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে (গভর্নমেন্ট টু পারসন)। আজ মঙ্গলবার সকালে প্রধানমন্ত্রী তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ওই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। কক্সবাজার থেকে এ কার্যক্রম শুরু হয়। এ অনুষ্ঠানেই প্রধানমন্ত্রী কোটা নিয়ে অনেক কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, পিএসসির অধীনে কোনো চাকরি পেতে হলে একজন শিক্ষার্থীকে গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। পিএসসির পরীক্ষাপদ্ধতি অত্যন্ত শক্ত। এ পরীক্ষায় যারা অংশ নেয়, তারা অত্যন্ত মেধাবী। মেধা ছাড়া এ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া সম্ভব নয়।
পিএসসির অধীনে নন-ক্যাডার চাকরি চালু করার প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তারা কেমন মেধাবী, যারা বলছেন নন-ক্যাডার চাকরি পাওয়া ব্যক্তিরা মেধাবী নন। তাঁরা কীভাবে এমন নির্বোধের মতো কথা বলতে পারেন?’
কোটা আন্দোলনে সহিংসতার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি আন্দোলনের বিষয়বস্তু বুঝতে পেরেছেন। কিন্তু তিনি এটা বুঝতে পারছেন না যে কেন মধ্যরাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের বাসভবনে হামলা হলো। তাঁর শোয়ার ঘরে ঢুকে স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থসহ মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করা হলো। শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে বিশ্বাস করতে পারছি না এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বাসভবনে হামলা করতে পারে। আমার এটা ভেবে লজ্জা হচ্ছে, আর হামলাকারীরা যদি শিক্ষার্থী হয়ে থাকে তাহলে সেটা আমাদের জন্য আরও লজ্জাজনক।’
শেখ হাসিনা বলেন, পরোক্ষভাবে এই কোটাবিরোধী আন্দোলনের উদ্দেশ্য হলো সরকারি চাকরি থেকে মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের বাইরে রাখা। দেশের সেবায় অবদান রাখতে আওয়ামী লীগ সরকার মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁদের পরিবারের জন্য এই কোটাপদ্ধতি নিশ্চিত করেছে।
এদিকে বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) খবরে বলা হয়েছে, অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘আপনারা জানেন যে হাইকোর্টে একটি রিট হয়েছিল। সে রিটের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট হুকুম দিল, এই ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা থাকবে, না হলে পদ শূন্য থাকবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটি যখন আপিল বিভাগে যায়, তখন আপিল বিভাগ একটা রায় দেন, ‘কোটা পূরণ করে যদি কোনো শূন্য পদ থাকে, তাহলে মেধাতালিকা থেকে তা পূরণ করা যাবে।’ মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রীর কাছ থেকে তিনি বিষয়টি অবহিত হয়ে কেবিনেট সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি করে দেন। কারণ, হাইকোর্টের রায় তিনি অবমাননা করতে পারেন না।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আন্দোলনের অরাজক পরিস্থিতি দেখে আমি বলেছিলাম, ‘ঠিক আছে কোটা থাকবে না।’ কোটা থাকবে না কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে আমাদের এটাও দেখতে হবে যে স্বাধীনতাবিরোধী এবং যুদ্ধাপরাধীরা যেন রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসতে না পারে বা রাষ্ট্রীয় কোনো পদপদবিতে বসতে না পারে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমার তাঁদের জন্য করুণা হয়, যখন দেখি শিক্ষিত শ্রেণি, প্রথিতযশা ব্যক্তি, এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও অবসর গ্রহণ করা সরকারি কর্মকর্তারা টক-শোতে গিয়ে কোটার বিরুদ্ধে কথা বলে থাকেন। তাঁরা উপাচার্যের বাড়িতে হামলার ঘটনাকে কখনোই গর্হিত কাজ বলে উল্লেখ করেন না।’
প্রধানমন্ত্রী তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের সাহায্যে কক্সবাজার জেলার সুবিধাভোগী, প্রশাসন এবং রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে কথোপকথনের মাধ্যমে ডিজিটাল পদ্ধতিতে মুক্তিযোদ্ধাদের অ্যাকাউন্টে এই সম্মানী ভাতা প্রদান কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব অপরূপ চৌধুরী এ প্রকল্প এবং মন্ত্রণালয়ের কর্মকাণ্ডের ওপর একটি প্রেজেন্টেশন অনুষ্ঠানে উপস্থাপন করেন। মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।
অপরূপ চৌধুরী জানান, ২ লাখ ৩০ হাজার ৪৩৮ জন গেজেটেড মুক্তিযোদ্ধার মধ্যে ১ লাখ ৮৬ হাজার ৪০৪ জন এই ডিজিটাল পদ্ধতিতে সরাসরি তাঁদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে এই ভাতা পাবেন। প্রত্যেকে ১০ হাজার করে টাকা পাবেন। সঙ্গে বাংলা নববর্ষের ভাতাসহ দুই ঈদে দুটি উৎসব ভাতাও থাকবে। সূত্রঃ প্রথম আলো

এমন আরো পোস্ট পেতে আমাদের ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করুন
Join

No comments:

Post a Comment

close