সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছেন সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ। বৃহস্পতিবার রাতে সংসদের ২২তম অধিবেশনের সমাপনী ভাষণে তিনি এ দাবি জানান।
ভারত ও ফ্রান্সসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমার উদাহরণ দিয়ে রওশন বলেন, চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়াতে ছাত্রছাত্রীদের দাবি যৌক্তিক। বাংলাদেশে চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ বছর করা দরকার।এটা হলে দেশের জন্য ভালো হবে। বিষয়টি মায়ের দৃষ্টিতে দেখার জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি তিনি আহ্বান জানান।
দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করারও দাবি জানিয়ে রওশন এরশাদ বলেন, এমপিওবিহীন সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্তি করা দরকার। এমপিওভুক্ত না করলে শিক্ষকরা অভাব-অনটনে কী করে পড়াশোনা করাবেন? কী করে প্রতিষ্ঠান চালাবেন? শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তি হলে শিক্ষকরা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারে। তারা আরো ভালোভাবে ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষা দিতে পারবেন।
শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় যাতে ক্ষতি না হয়, তা নিশ্চিত করতে রাত ১১টার পর ফেসবুক বন্ধ রাখার ব্যবস্থা নিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পরামর্শ দেন রওশন এরশাদ। জাতীয় পার্টির নেত্রী রওশন বলেন, পৃথিবীর অনেক দেশেই ফেসবুক নেই। চীনে নেই, সৌদি আরবে নেই। স্মার্টফোন আর ইন্টারনেটের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার করছে আমাদের ছেলেমেয়েরা। এরা রাতে ঘুমায় না, জেগে জেগে ফেসবুক দেখে। ফেসবুকে আসক্ত হয়ে গেছে। এটা একটা সময় সীমার মধ্যে আনা গেলে ভালো হয়। ১১টার পরে ফেসবুক বন্ধ করতে পারলে পড়াশোনায় মন থাকবে। পৃথিবীর অনেক দেশেই ফেসবুক নেই। চায়নায় নেই, সৌদি আরবে নেই।
তিনি বলেন, শিশুদের হাতে স্মার্টফোন তুলে দেওয়া আর কোকেন তুলে দেওয়া একই। ডিজিটাল বাংলাদেশ, সোনার বাংলাদেশ গড়তে চাইলে ছেলেমেয়েদের রক্ষা করতে হবে। উপায় খুঁজতে হবে।
বর্তমান দশম জাতীয় সংসদকে অত্যন্ত সফল বলে আখ্যায়িত করে রওশন এরশাদ বলেন, আগামী ২০ বছর ধরে সংসদে আছি। এবারের মতো সফল আলোচনামুখর পার্লামেন্ট আগে কখনও দেখিনি। আমরা সরকারি বিরোধী দল বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেছি। সুষ্ঠুভাবে সংসদ চালাতে সাহায্য সহযোগিতা করেছি। আইন পাসের সময় আমাদের বিরোধী দলের অনেক সংশোধনী প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, তরুণ সমাজ ভবিষ্যতে যেন দেশের দায়িত্ব নিতে পারে সেভাবে গড়ে তুলতে হবে। আমাদের ১০ কোটি ৯১ লাখ কর্মক্ষম লোকের মধ্যে ৬ কোটি ৮০ লাখ কর্মে নিয়োজিত। বাকিরা বেকার। এই বেকার তরুণদের কর্মে সম্পৃক্ত করতে না পারলে সোনার বাংলা গড়ে তোলা সম্ভব নয়।
কোটা সংস্কারের আন্দোলন করে অনেকে হয়রানির শিকার হচ্ছে বলে মন্তব্য করে রওশন এরশাদ বলেন, আমরা বসে আলাপ-আলোচনা করে সমাধান বের করতে হবে। আমাদের ছেলেমেয়েরা হয়রানির শিকার হবে, তা চাই না। কোটা সংস্কারে স্থায়ী সমাধান খুঁজে বের করতে হবে।
মুক্তিযোদ্ধা কোটা রাখা যেতে পারে মন্তব্য করে তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধার কোটা রাখতে হবে আর তুলে দেওয়া হলে মুক্তিযোদ্ধোদের অন্যভাবে সুযোগ সুবিধা দিতে হবে। কারণ মুক্তিযোদ্ধারা দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান। দেশের জন্য তাদের অনেক ত্যাগ রয়েছে।
No comments:
Post a Comment